কাজী বজলুল হকের জীবনী
১৯৩৮ সালে হাজীগঞ্জ উপজেলার পালিশারা গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন কাজী বজলুল হক। বাবা কাজী আলীমুদ্দিনের হাত ধরে নিজ গ্রাম পালিশারার ‘পালীশারা জুনিয়র মাদ্রসায়’ লেখাপড়া শুরু করেণ।
১৯৩৮ সালে হাজীগঞ্জ উপজেলার পালিশারা গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন কাজী বজলুল হক। বাবা কাজী আলীমুদ্দিনের হাত ধরে নিজ গ্রাম পালিশারার ‘পালীশারা জুনিয়র মাদ্রসায়’ লেখাপড়া শুরু করেণ। এরপর ১৯৪৮ সালে এ মাদ্রাসা থেকে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় বৃত্তি লাভ করেণ। পরবর্তী সময়ে শাহরাস্তী মাদ্রাসায় ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই ১৯৫৩ সালে মাদ্রাসা পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৭ম স্থান দখল করেণ। এরপর লাকসাম নওয়াব ফয়জুন্নেসা কলেজ থেকে ১৯৫৫ সালে আইএ পারীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান দখল করেন।
১৯৫৭ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষায় ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ হন এবং ১৯৬২ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে প্রথম শ্রেণীতে বিএড পাস করেন এবং মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থান দখল করেন। আর্থিক অনটনের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে উঠেনি। বিএড কোর্স করার পরপরই তিনি গ্রামে চলে যান এবং নিজ গ্রামের পালীশারা হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেণ। পরে ১৯৬৩ সালে চট্রগ্রামের রাঙ্গুনিয়া হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
১৯৬৪ সালে সেখান থেকে আসেন লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। দায়িত্ব নিলেন সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে। লাকসাম হাইস্কুলে প্রায় ৯ বছর শিক্ষাকতা করার পর তিনি ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারী হাজীগঞ্জ পাইলট হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
এই দীর্ঘ সময়ে সম্মান এবং সাফল্যের সঙ্গে শিক্ষাকতার পাশাপাশি দু’দুবার জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কৃত হয়েছেন। প্রথমবার ১৯৮৯ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে পুরস্কৃত হন। পরবর্তী সময়ে ১৯৯৮ সালে অর্জন করেন জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হওয়া গৌরব।
তিনি ২০০৩ সালের ২৪ মে শুক্রবার টোরাগড় কাজী বাড়ি জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় তিনি গুরুতর আহত হন। আহত হয়ে ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ মে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। চাঁদপুর জেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সবচে’ সফল প্রধান শিক্ষক হিসেবে খ্যাতি ও স্বীকৃতি অর্জনকারী কাজী বজলুল হক মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত হাজীগঞ্জ পাইলট হাইস্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের পদে আসীন ছিলেন।
তিনি ৫ সন্তানের জনক। বড় ছেলে কাজী আনোয়ারুল হক হেলাল (প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখা সহ-সভাপতি, ২য় সন্তান ডা.কাজী মোস্তফা সারোয়ার,অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব (প্রাক্তন মহাপরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, ঢাকা) ৩ সন্তান তানজিনা ফেরদৌস রুনা( উপধ্যক্ষ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, তেজগাঁও ঢাকা), ৪র্থ সন্তান কাজী মাহবুবুল আলম ( জেলা প্রশাসক, গোপালগঞ্জ), ছোট ছেলে কাজী মাজহারুল হক সোহাগ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অকাল মুত্যু হয়।